প্রথম খন্ডঃ মন্ত্রসংখ্যা ১০ ।। দেবতা ইন্দ্র (৩য় ঋকের দেবতা অগ্নি বা হবীংষি) ।। ছন্দ গায়ত্রী ।। ঋষিঃ ১ শংযুর্বার্হস্পত্য, ২ শ্রুতকক্ষ সুকক্ষ অথবা আঙ্গিরস, ৩ হর্যত প্রাগাথ, ৪।৫ শ্রুতকক্ষ বা সুকক্ষ (৫ সুকক্ষ আঙ্গিরস), ৬ দেবজামি ইন্দ্রমাতা ঋষিকা, ৭।৮ গোষুক্তি-অশ্বসুক্তি কান্বায়ন, ৯।১০ মেধাতিথি কান্ব, আঙ্গিরস প্রিয়মেধ।।
মন্ত্রঃ (১১৫) তদ্ বো গায় সুতে সচা পুরুহূতায় সত্বনে। শং যদ্ গবে ন শাকিনে।।১।।
(১১৬) যস্তে নূনং শতক্রতবিন্দ্র দ্যুম্নিতমো মদঃ। তেন নূনং মদে মদে।।২।। (১১৭) গাব
উপ বটাবটে মহী যজ্ঞস্য রপ্সুদা। উভা কর্ণা হিরণ্যয়া।।৩।। (১১৮) অরমশ্বায় গায়ত
শ্রুতকক্ষারং গবে। অরমিন্দ্রস্য ধাম্নে।।৪।। (১১৯) তমিন্দ্রং বাজয়ামসি মহে বৃত্রায়
হন্তবে। স বৃষা বৃষভো ভূবৎ।।৫।। (১২০) ত্বমিন্দ্র বলাদধি সহসো জাত ওজসঃ। ত্বং সন্
বৃষন্ বৃষেদসি।।৬।। (১২১) যজ্ঞ ইন্দ্রমবর্ধয়দ্ যদ্ ভূমিং ব্যবর্তয়ৎ। চক্রাণ
ওপশং দিবি।।৭।। (১২২) যদিন্দ্রাহং যথা ত্বমীশীয় বস্ব এক ইৎ। স্তোতা মে গোসখা
স্যাৎ।।৮।। (১২৩) পন্যং পন্যমিৎ সোতার আ ধাবত মদ্যায়। সোমং বীরায় মুরায়।।৯।। (১২৪)
ইদং বসো সুতমন্ধঃ পিবা সুপুর্ণমুদরম্। অনাভয়িন্ ররিমা তে।।১০।।
অনুবাদঃ (১১৫) হে স্তোতাগণ, গবাদি পশুর কাছে উদ্ভিদ্ যেমন সুখকর হয় সেরূপ সোমাভিষবে বহুলোকের বন্দনীয়
সর্বশক্তিমান ইন্দ্রের সুখদায়ক স্তোত্র একত্র মিলিত হয়ে গান কর। (১১৬) হে
শতযজ্ঞকারী ইন্দ্র, পরমানন্দদায়ক সোমরস তোমার জন্য
আমরা অভিষব করেছি, সেই রস পান ক'রে বারবার মত্ত হয়ে আমাদের আনন্দ দান কর।। (১১৭) দ্যুলোক ও ভূলোক উভয়ে
বাণীযুক্তা, উভয়ের শ্রবণসামর্থ্য দীপ্তিময়ী; হে দেবরশ্মিগণ, পৃথিবীতলে যক্ষক্ষেত্রে অবনমিত
হও।। (১১৮) শ্রুতকক্ষ ঋষি তেজ ও বলের জন্য গান করছেন, তিনি ইন্দ্রধাম প্রাপ্তির জন্য আকুল হয়ে গান করছেন।। (১১৯) বিপুলাকৃতি বৃত্রকে
(=মেঘকে) বধের জন্য আমরা ইন্দ্রকে রহস্যময়বাক্যের দ্বারা স্তব করি। সেই
অভীষ্টবর্ষী ইন্দ্র আমাদের অভিলাষ পূরণ করুন।। (১২০) হে ইন্দ্র, তুমি তেজ ও বল হতে জন্মেছ; হে অভীষ্টবর্ষী তুমিই
মনোবাঞ্ছা পূরণকর্তা।। (১২১) যজ্ঞ ইন্দ্রকে বর্ধিত করেছে কারণ তিনি অন্তরিক্ষ
শায়িত মেঘ থেকে বৃষ্টি প্রদান ক'রে পৃথিবীর আগর্তন
রক্ষা করেছেন।। (১২২) হে ইন্দ্র, তুমি যেমন একাই ধনের
ঈশ্বর সেরূপ আমি ঐশ্বর্যযুক্ত হলে আমার ভক্ত ধনযুক্ত হোত।। (১২৩) হে
সোমপ্রস্তুতকারিগণ, এই আশ্চর্য সোমকে হর্ষ ও
শৌর্যযুক্ত বীর ইন্দ্রের উদ্দেশে উৎসর্গের জন্য দ্রুত আগমন কর।। (১২৪) হে সর্বধন
ইন্দ্র,
উদরপূর্ণ ক'রে সোম পান কর; হে নির্ভীক, এ দান তোমার জন্য।।
দ্বিতীয় খন্ডঃ মন্ত্র সংখ্যা ১০।। দেবতা ইন্দ্র (৯ অগ্নি ও ইন্দ্র) ছন্দ গায়ত্রী।। ঋষিঃ ১।২ সুকক্ষ ও শ্রুতকক্ষ আঙ্গিরস, ৩ ভরদ্বাজ (ঋগ্বেদে শংযু বার্হস্পত্য), ৪ শ্রুতকক্ষ (ঋগ্বেদে সুকক্ষ আঙ্গিরস), ৫।৬ মধুছন্দা বৈশ্বামিত্র, ৭।৯।১০ ত্রিশোক কান্ব, ৮ বসিষ্ঠ মৈত্রাবরুণি।।
মন্ত্রঃ (১২৫) ঊদ্ধেদভি শুতামঘং বৃষভং নর্যাপসম্।
অস্তারমেষি সূর্য।।১।। (১২৬) যদদ্য কচ্চ বৃত্রহন্নুদগা অভি সূর্য। সর্বং তদিন্দ্র
তে বশে।।২।। (১২৭) য আনয়ৎ পরাবতঃ সুনীতী তুর্বশং যদুম্। ইন্দ্রঃ স নো যুবা
সখা।।৩।। (১২৮) মা ন ইন্দাভ্যাত দিশঃ সূরো অক্তুম্বা যমৎ। ত্বা যুজা বনেম তৎ।।৪।।
(১২৯) এন্দ্র সানসিং রয়িং সজিত্বানং সদাসহম্। বর্ষিষ্ঠমূতয়ে ভর।।৫।। (১৩০)
ইন্দ্রং বয়ং মহাধন ইন্দ্রমর্ভে হবামহে। যুজং বৃত্রেষু বজ্রিণম্।।৬।। (১৩১) অপিবৎ
কদ্রুবঃ সুতমিন্দ্রঃ সহস্রবাহ্বে। তত্রাদদিষ্ট পৌংস্যম্।।৭।। (১৩২) বয়মিন্দ্র
ত্বায়বোহভি প্র নোনুমো বৃষন্। বিদ্ধী ত্বাতস্য নো বসো।।৮।। (১৩৩) আ ঘা যে
অগ্নিমিন্ধতে স্তৃনন্তি বর্হিরানুষক। যেষামিন্দ্রো যুবা সখা।।৯।। (১৩৪) ভিন্ধি
বিশ্বা অপ দ্বিষঃ পরি বাধো জহী মৃধঃ। বসু স্পার্হং তদা ভর।।১০।।
অনুবাদঃ (১২৫) হে সূর্য কীর্তিযুক্তধনবিশিষ্ট, অভিলাষপূরণকারী, মানুষের হিতকারী উদার পুরুষের জন্য
উদিত হও।। (১২৬) হে সূর্য, হে বৃত্রবধকারী, হে ইন্দ্র, আজ এই যেসব পদার্থের সামনে উদিত হয়েছ, এ সকলই তোমার বশে এসেছে।। (১২৭) যিনি সুষ্টু নীতির দ্বারা পরিচালিত হয়ে দূরদেশ
থেকে তুর্বশ ও যদুকে এনেছিলেন সেই যুবা ইন্দ্র আমাদের সখা।
[তুর্বশ=ধর্ম-অর্থ-কাম-মোক্ষযুক্ত মানুষ। যদু=আচার্যের উপদেশে বিপথ হতে বিরত
মানুষ। (নিঘন্টু ভাষ্য)]।। (১২৮) হে ইন্দ্র, প্রবল শত্রু
যেন রাত্রির অন্ধকারে চতুর্দিকে আমাদের ঘিরে না ফেলে; তোমার সহায়তায় আমরা তাদের রুখতে পারবো।। (১২৯) হে ইন্দ্র, আমাদের পালনের জন্য, তুল্য প্রতিদ্বন্দ্বীকে জয় করবার
জন্য,
নিরন্তর সেবনযোগ্য শত্রুপরাভবকারী প্রচুর ধন আন।। (১৩০)
আমরা ইন্দ্রকে প্রচুর ধনের জন্য আহ্বাব করি, আমরা ইন্দ্র
অল্পধনের প্রয়োজনেও আহ্বান করি। বজ্রধারী ইন্দ্র শত্রুনিবারণে সহায়ক।। (১৩১)
ইন্দ্রদেব অমিতবলের জন্য কলসপূর্ণ সোম পান করবেন, তার ভলে ইন্দ্রের পৌরুষ অত্যন্ত বৃদ্ধি পেল।। (১৩২) হে ইচ্ছাপূরক ইন্দ্র, তোমার কাছে কামনা ক'রে বারবার তোমার স্তব করি। হে
আশ্রয়দাতা, আমাদের স্তুতি অন্তরে গ্রহণ কর।। (১৩৩)
যাঁরা অগ্নিকে সন্দীপ্ত করেন, যাঁরা মিলিতভাবে
প্রসারিত করেন, যুবা ইন্দ্র তাঁদের সখা।। (১৩৪) হে
ইন্দ্র,
সকল অপশক্তিকে দ্বেষ কর, বিনাশ কর, সংগ্রামকারী শত্রুকে বধ কর; তারপর কাম্য ধন প্রদান
কর।।
তৃতীয় খন্ডঃ মন্ত্র সংখ্যা ১০।। দেবতা ইন্দ্র (১ মরুদ্গণ, ৪ বিশ্বদেবগণ; ৫ ব্রহ্মণস্পতি; ৭ সবিতা)।। ছন্দ গায়ত্রী।। ঋষিঃ ১ কন্ব ঘৌর, ২ ত্রিশোক কানব, ৩।৯ বৎস কান্ব, ৪ কুসীদো কান্ব, ৫ মেধাতিথি কান্ব, ৬ শ্রুতকক্ষ বা সুকক্ষ আঙ্গিরস, ৭ শাবাশ্ব আত্রেয়, ৮ প্রগাথ কান্ব, ১০ ইরিম্বিঠি কান্ব।।
মন্ত্রঃ (১৩৫) ইহেব শৃন্ব এষাং কশা হস্তেযু যদ্
বদান্। নি যামং চিত্রমৃঞ্জতে।।১।। (১৩৬) ইম উ ত্বা বি চক্ষতে সখায় ইন্দ্র সোমিনঃ।
পুষ্টাবন্তো যথা পশুম্।।২।। (১৩৭) সমস্য মন্যবে বিশ বিশ্বা নমস্ত কৃষ্টয়ঃ।
সমুদ্রায়েব সিন্ধবঃ।।৩।। (১৩৮) দেবানামিদবো মহৎ তদা বৃণীমহে বয়ম্। বৃষ্ণামস্মভ্য
মূতয়ে।।৪।। (১৩৯) সোমানাং স্বরণং কৃণুহি ব্রহ্মণস্পতে। কক্ষীবন্তং য ঔশিজঃ।।৫।।
(১৪০) বোধন্মনা ইদস্তু নো বৃত্রহা ভূর্যাসুতি। শৃণোতু শক্র আশিষম্।।৬।। (১৪১)
অদ্য নো দেব সবিতঃ প্রজাবৎ সাবীঃ সৌভগম্। পরা দুঃষ্বপ্ন্যং সুব।।৭।। (১৪২) কৃতস্য
বৃষভো যুবা তুবিগ্রীবো অনানতঃ। ব্রহ্মা কন্তং সপর্যতি।।৮।। (১৪৩) উপহ্বরে গিরীণা
সঙ্গমে চ নদীনাম্। ধিয়া বিপ্রো অজায়ত।।৯।। (১৪৪) প্র সম্রাজং চর্ষণীনামিন্দ্রং
স্তোতা নব্যং গীর্ভিঃ। নরং বৃষাহং মংহিষ্ঠম্।।১০।।
অনুবাদঃ (১৩৫) মরুদ্দেবগণের হাতের চাবুকে শন্শন্
শব্দ শুনতে পাচ্ছি; সে শব্দ (বৃত্রের সঙ্গে) যুদ্ধকে
মাতিয়ে তোলে।। (মরৎ=বায়ু। কশা=শব্দ)।। (১৩৬) পশুপালক পশুর দিকে যেমন তাকিয়ে থাকে
সেরূপ হে ইন্দ্র, সোমপ্রস্তুতকারী সখারা তোমার দিকে
তাকিয়ে আছে।। (১৩৭) বিশাল সমুদ্র অভিমুখে যেমন নদ-নদী ধাবিত হয় তেমনি বিশ্বের সকল
মানুষ তাঁর দীপ্ততেজোরাশির জন্য তাঁকে প্রণাম করে।। (১৩৮) আমাদের রক্ষার জন্য
কামবর্ষী দেবগণ সেই মহাপালন আমরা বরণ করি।। (১৩৯) হে ব্রহ্মণস্পতি, ঊশিজপুত্র কক্ষীবানের মত সোমপ্রাস্তুতকারী আমাকে প্রখ্যাত কর।। (১৪০) বহুসোম
যাঁর জন্য প্রস্তুত হয় সেই বৃত্রহন্তা ইন্দ্রদেব আমাদের অভিলাষ জানুন, আমাদের স্তব শুনুন।। (১৪১) হে সবিতাদেব, আজ আমাদের
সন্তান সৌভাগ্য দাও; আমাদের দুঃস্বপ্ন দূর কর।। (১৪২)
সেই কামবর্ষী চিরতরুণ, বিশালগ্রীব, অনমনীয় ইন্দ্র কোথায়? সেই ব্রহ্মরূপী ইন্দ্রকে কে
পরিচর্যা করছে? (১৪৩) পর্বতপ্রান্তে, নদীসঙ্গমে যজ্ঞকর্মের দ্বারা ইন্দ্র জন্মলাভ করেন।। (১৪৪) মানুষের সম্রাট, নেতা,
শত্রুপরাভবকারী, অতিদাতা
ইন্দ্রকে নতুন মন্ত্রে স্তব কর।।
চতুর্থ খন্ডঃ মন্ত্র সংখ্যা ১০।। দেবতা ইন্দ্র (৪ ইন্দ্র ও পূষা)।। ছন্দ গায়ত্রী।। ঋষিঃ ১ শ্রুতকক্ষ বা সুকক্ষ আঙ্গিরস, ২ মেধাতিথি কান্ব (ঋগ্বেদ শংযু বার্হস্পত্য), ৩ গোতম রাহুগণ, ৪ ভরদ্বাজ বার্হস্পত্য, ৫ বিন্দু বা পূতদক্ষ অঙ্গিরস, ৬।৭ শ্রুতকক্ষ বা সুকক্ষ আঙ্গিরস, ৮ বৎস কান্ব, ৯ শুনঃশেপ আজীগর্তি, ১০ শুনঃশেপ আজীগর্তি বা বামদেব।।
মন্ত্রঃ (১৪৫) অপাদু শিপ্র্যন্ধসঃ সুদক্ষস্য
প্রহোষিণঃ। ইন্দোরিন্দ্রো যবাশিরঃ।।১।। (১৪৬) ইমা উ ত্বা পুরূবসোহভি প্র
নোনুবুর্গিরঃ। গাবো বৎসং ন ধেনবঃ।।২।। (১৪৭) অত্রাহ গোরমন্বত নাম ত্বষ্টুরপীচ্যম।
ইত্থা চন্দ্রমসো গৃহে।।৩।। (১৪৮) যদিন্দ্রো অনয়দ্রিতো মহীরপো বষন্তমঃ। তত্র পূষা
ভবৎ সচা।।৪।। (১৪৯) গৌর্ধয়তি মরুতাং শ্রবস্যুর্মাতা মঘোনাম্। যুক্তা বহ্নী
রথানাম্।।৫।। (১৫০) উপ নো হরিতিঃ সুতং যাহি মদানাং পতে। উপ নো হরিভিঃ সুতম্।।৬।।
(১৫১) ইষ্টা হোত্রা অসৃক্ষতেন্দ্রং বৃধন্তো অধ্বরে। অচ্ছাবভৃথমোজসা।।৭।। (১৫২)
অহমিদ্ধি পিতুস্পরি মেধামৃতস্য জগ্রহ। অহং সূর্য ইবাজনি।।৮।। (১৫৩) রেবতীর্নঃ
সধমাদ ইন্দ্রে সন্তু তুবিবাজাঃ। ক্ষুমন্তো যাভির্মদেম।।৯।। (১৫৪) সোমঃ পূষা চ
চেতুতুর্বিশ্বাসাং সুক্ষিতীনাম্ দেবত্রা রথ্যোর্হিতা।।১০।।
অনুবাদঃ (১৪৫) জল বর্ষণের দ্বারা অন্নদাতা ইন্দ্র
নিপুণ যজ্ঞকারীর যবমিশ্রিত সোমরস তৃপ্তির সঙ্গে পান করেন।। (১৪৬) হে বহুজনের
আশ্রয়দাতা ইন্দ্র, গোবৎসের প্রতি ধেনুগণ যেমন গমন করে
সেরূপ আমাদের এই স্তুতিসকল তোমা অভিমুখে গমন ক'রে।। (১৪৭)
সুর্যমন্ডল হতে স্নিগ্ধরশ্মি যে চন্দ্রমন্ডলে প্রবিষ্ট হয় তা' ইন্দ্র জানেন।। (১৪৮) অতি বর্ষণকারী ইন্দ্র যখন ঋতকর্মের দ্বারা মহান
বারিরাশিকে প্রেরণ করেন তখন পূষারূপী সূর্য তাঁর সহায়ক হন।। (১৪৯) বহুধনের স্রষ্টা, যশ ও অন্নের নির্মাতা মাতৃরূপী ইন্দ্র (বর্ষণ ইচ্ছা ক'রে) মরুৎ বায়ুদের সোম পান করাচ্ছেন, তাঁর গমনপথে
রশ্মিসমূহকে যুক্ত করছেন।। (১৫০) হে আনন্দের দেবতা, তোমার রশ্মিরূপ অশ্বের সহায়তায় আমাদের এই সোমযাগে এস, আমাদের এই সোমযাগে এস।। (১৫১) যজ্ঞের বগৃধি কামনা করে যজ্ঞকামী হোতাগনো
ইন্দ্রের উদ্দেশে আহুতি উৎসর্গ করলেন; যজ্ঞান্তে
অবগাহন স্নানের জন্য গমন করলেন। (১৫২) আমিই যজ্ঞের দ্বারা সত্য ও অন্নের অনুগ্রহ
লাভ করেছি।। আমি সূর্যের মত প্রকাশিত।। (১৫৩) সোম মত্ত ইন্দ্রে হোও আমাদের জন্য
প্রচুর অন্ন ও জল, যে অন্ন-জলে অন্নবান হয় আমরা হৃষ্ট
হবো।। (১৫৪) সোম ও পূষা বিশ্বের সকল পদার্থকে জানুন, যাঁরা দেবরশ্মিগণের সঙ্গে রথে যোজিত।।
পঞ্চম খন্ডঃ মন্ত্রসংখ্যা ১০।। দেবতা ইন্দ্র।। ছন্দ গায়ত্রী।। ঋষিঃ ১।৪ শ্রুতকক্ষ বা সুকক্ষ আঙ্গিরস, ২ বসিষ্ঠ মৈত্রাবরুণি, ৩ মেধাতিথি কান্ব, প্রিয়মেধ আঙ্গিরস, ৫ ইরিম্বিঠি কান্ব, ৬।১০ মধুচ্ছন্দা বৈশ্বামিত্র, ৭ ত্রিশোক কান্ব, ৮ কুসীদী কান্ব, ৯ শুনঃশেপ আজীগর্তি।।
মন্ত্রঃ (১৫৫) পান্তমা বো অন্ধস ইন্দ্রমভি প্র গায়ত।
বিশ্বাসাহং শতক্রতুং মংহিষ্ঠং চর্ষণীনাম্।।১।। (১৫৬) প্র ব ইন্দ্রায় মাদনং
হর্যশ্বায় গায়ত। সখায়ঃ সোমপাব্নে।।২।। (১৫৭) বয়মু ত্বা তদিদর্থা ইন্দ্র ত্বায়ন্তা
সখায়ঃ। কন্বা উক্থেভির্জরন্তে।।৩।। (১৫৮) ইন্দ্রায় মদ্ধনে সুতং পরি ষ্টোভন্তু নো
গিরঃ। অর্কমর্চন্তু কারবঃ।।৪।। (১৫৯) অয়ং ত ইন্দ্র সোমো নিপূতো অধি বর্হিষি।
এহীমস্য দ্রবা পিব।।৫।। (১৬০) সুরূপকৃৎনুমূতয়ে সুদুঘামিব গোদুহে। জুহূমসি
দ্যবিদ্যবি।।৬।। (১৬১) অভি ত্বা বৃষভা সুতং সৃজামি পীতয়ে। তৃস্পা ব্যশ্মহী মদম্।।৭।।
(১৬২) য ইন্দ্র চমসেম্বা সোমশ্চমূষু তে সুতঃ। পিবেদস্য ত্বমীশিষে।।৮।। (১৬৩)
যোগেযোগে তবস্তরং বাজেবাজে হবামহে। সখায় ইন্দ্রমূতয়ে।।৯।। (১৬৪) আ ত্বেতা নি
ষীদতেন্দ্রমভি প্র গায়ত। সখায়ঃ স্তোমবাহসঃ।।১০।।
অনুবাদঃ (১৫৫) তোমাদের মঙ্গলের জন্য ইন্দ্রের
উদ্দেশে পানযোগ্য সোমরস নিবেদন করে' গান কর; তিনি বিশ্বজিৎ, শতকর্মা, মানুষের শ্রেষ্ঠদাতা।। (১৫৬) হে সখাগণ, হরিতবর্ণ
রশ্মিযুক্ত (=হর্ষশ্ব); সোমপায়ী (=জলরাশির পালক), ইন্দ্রের উদ্দেশে আনন্দজনক গান গাও।। (১৫৭) হে ইন্দ্র, আমরা তোমার সখা, তোমাকেই কামনা করি। আমরা কন্বের
সন্তান (অথবা বিপ্রগণ) তোমাকে মন্ত্রমালায় স্তুতি করি।। (১৫৮) ইন্দ্রের উদ্দেশে যে
মদকর সোম তাকে ঘিরে আমাদের গান হোক; গায়কেরা সোমকে
অর্চনা করুন।। (১৫৯) হে ইন্দ্র, কুশের উপরে যে পূত সোম
রয়েছে তা তোমার জন্য; এখন এস, ওই সোম পান কর।। (১৬০) পয়স্বিনী গাভীকে দোহনের জন্য দোহনকারী যেমন ডাকে আমরাও
তেমনি সুকর্ম ইন্দ্রকে ডাকি আমাদের রক্ষার জন্য।। (১৬১) হে অভীষ্টবর্ষী ইন্দ্র, সোম প্রস্তুত হলে তোমার পানের জন্য তা' উৎসর্গ করি; সেই মদকর সোম পান করে' তৃপ্ত হও।। (১৬২) হে ইন্দ্র, তোমার জন্য সোম চমসে ও চমূ পাত্রে আছে। তুমি তা' পান করে প্রভুত্ব কর।। (১৬৩) আমরা ইন্দ্রের সখা, আমাদের রক্ষার জন্য অতি মহান ইন্দ্রকে প্রত্যেক কর্ম কৌশলে, প্রত্যেক জ্ঞানকর্মে আহ্বান করি।। (১৬৪) হে সামগানকারী সখাগণ, এস,
শীঘ্র এস, উপবেশন কর। ইন্দ্রের
উদ্দেশে অন্তর দিয়ে গান কর।।
ষষ্ঠ খন্ডঃ মন্ত্রসংখ্যা ১০।। দেবতা ইন্দ্র (৭ সদসস্পতি; ১০ মরুদ্গণ)।। ছন্দ গায়ত্রী।। ঋষিঃ ১ গাথি বিশ্বমিত্র, ২ মধুচ্ছন্দা বৈশ্বামিত্র, ৩ কুসীদী কান্ব, ৪ প্রিয়মেধ আঙ্গিরস, ৫।৮ বামদেব গৌতমি, ৬।৯ শ্রৃবক্ষ বা সুবক্ষ আঙ্গিরস, ৭ মেধাতিথি কান্ব, ১০ বিন্দু বা পূতদক্ষ আঙ্গিরস।।
মন্ত্রঃ (১৬৫) ইদং হ্যন্বোজসা সুতং রাধানাং পতে।
পিবা ত্বতস্য গির্বণ।।১।। (১৬৬) মহাঁ ইন্দ্রঃ পুরুশ্চ নো মহিত্বমস্তু বজ্রিণে।
দ্যোর্ন প্রথিনা শবঃ।।২।। (১৬৭) আ তূ ন ইন্দ্র ক্ষুমন্তং চিত্রং গ্রাভং সং গৃভায়।
মহাহস্তী দক্ষিণেন।।৩।। (১৬৮) অভি প্র গোপতিং গিরেন্দ্রমর্চ যথা বিদে।
সূনুংসত্যস্য সৎপতিম্।।৪।। কয়া নশ্চিত্র আভুবদুতী সদাবৃধঃ সখা। কয়া শচিষ্ঠয়া
বৃতা।।৫।। (১৭০) ত্যমু বঃ সত্রাসাহং বিশ্বাষু গীর্ম্বাষতম্। আ চ্যাবয়স্তূতয়ে।।৬।।
(১৭১) সদসস্পতিমদ ভূতং প্রিয়মিন্দ্রস্য কাম্যম্। সনিং মেধামযাসিষম্।।৭।। (১৭২)
যে তে পন্থা আধো দিবো যেভির্ব্যশ্বমৈরয়ঃ উত শ্রোষন্তু নো ভুবঃ।।৮।। (১৭৩) ভদ্রং
ভদ্রং ন আ ভরেষমুর্জং শতক্রতো। যদিন্দ্র মৃড়য়াসি নঃ।।৯।। (১৭৪) অস্তি সোমো অয়ং
সুতঃ পিবস্ত্যস্য মরুতঃ। উত স্বরাজ্যে অশ্বিনা।।১০।।
অনুবাদঃ (১৬৫) হে রাধাপতি (=সর্বসিদ্ধিকর ধনের
অধিপতি),
হে স্তুতিপ্রিয় ইন্দ্র, বলসহায়ে
প্রস্তুত এই সোমরস তোমার পানের জন্য।। (১৬৬) বজ্রী ইন্দ্রের মহত্ব হোক, বল হোক বিপুল, দ্যুলোকের মত; ইন্দ্র যে শ্রেষ্ঠ ও মহান।। (১৬৭) এস হে ইন্দ্র, মহাহস্তবিশিষ্ট; আমাদের গ্রহণযোগ্য বিবিধ অন্নধন
দানের জন্য তোমার দক্ষিণহস্ত প্রসারিত কর।। (১৬৮) সত্যের দ্যোতক, সৎকর্মের পালক, রশ্মিসমূহের অধিপতি ইন্দ্র যাতে
জানতে পারেন সেইভাবে তাঁকে স্তব কর।। (১৬৯) সদা বর্ধমান, বিচিত্রকর্মা, সখা ইন্দ্র কোন পূজাতে আমাদের কাছে
আসবেন?
কোন শ্রেষ্ঠ কর্মের দ্বারা বৃত হয়ে তিনি আমাদের কাছে আসবেন? (১৭০) সকল কিছু যিনি জয় করেন, সকল স্তোত্র যাঁকে
প্রসারিত করে সেই ইন্দ্রকে তোমাদের মঙ্গলের জন্য মন্ত্র উচ্চারণ করে কাছে আন।
(১৭১) মহান ইন্দ্রের প্রিয়, সকলের কার্ম সর্বযজ্ঞাধিপতি অগ্নির
কাছে ভক্তি ও প্রজ্ঞা যাচ্ঞা করি।। (১৭২) যে পন্থা অবলম্বন করে তুমি দ্যুলোক থেকে
অধোলোকে তোমার অশ্বরশ্মিকে প্রেরণ কর, আমাদের পৃথিবীর
জন্যও তুমি সেই ভাবে তোমার কর্মে অপ্রমত্ত থাক।। (১৭৩) হে ইন্দ্র, যখন তুমি আমাদের সুখী কর তখন হে শতকর্মা, আমাদের জন্য
অন্ন বল সম্পাদন করে আমাদের সকল কিছুই ভদ্র কর।। (১৭৪) এই সোম প্রস্তুত হয়েছে; প্রাণবায়ু মরুদ্গণ তা' পান করুন; আর মহাভোজী অশ্বিদ্বয়ও (=দেশ ও কাল) পান করুন।।
সপ্তম খন্ড।। মন্ত্র সংখ্যা ১০।। দেবতা ইন্দ্র (৪ অশ্বিদ্ব্য, ১০ বায়ু)।। ছন্দ গায়ত্রী।। ঋষিঃ ১ ইন্দ্রমাতা দেবজামিগণ, ২ গোধা ঋষিকা, ৩ দধ্যঙ্ আথর্বণ, ৪ প্রস্কন্ব কান্ব, ৫ গোতম রাহুগণ, ৬ মধুচ্ছন্দা বৈশ্বামিত্র, ৭ বামদেব গৌতম, ৮ বৎস কান্ব, ৯ শুনঃশেপ আজীগর্তি, ১০ উল বাতায়ন।।
মন্ত্রঃ (১৭৫) ঈঙ্খয়ন্তীরপস্যুব ইন্দ্রয় জাতমুপাসতে।
বন্বানাসঃ সুবীর্যম্।।১।। (১৭৬) নকি দেবা ইনীমসি ন ক্যা যোপয়ামসি। মন্ত্রশ্রুত্যং
চরামসি।।২।। (১৭৭) দোষো আগাদ্ বৃহদ্গায় দ্যুমদ্ গামন্নাথর্বণ। স্তুতি দেবং
সবিতারম্।।৩।। (১৭৮) এসো ঊষা অপূর্ব্যা ব্যুচ্ছতি প্রিয়া দিবঃ। স্তুষে বামশ্বিনা
বৃহৎ।।৪।। (১৭৯) ইন্দ্রো দধীচো অস্থভির্বত্রাণ্যপ্রতিমঙ্কুতঃ। জধান নবতীর্নব।।৫।।
(১৮০) ইন্দ্রেহি মৎস্যন্ধসো বিশ্বেভিঃ সোমপর্বভিঃ। মহাঁ অভিষ্টিরোজসা।।৬।। (১৮১) আ
তূ ন ইন্দ্র বৃত্রহন্নস্মাকমর্ধমা গহি। মহান্ মহীভিরূতিভিঃ।।৭।। (১৮২) ওজন্তদস্য
তিত্বিষ উভে যৎ সমবর্তয়ৎ। ইন্দ্রশ্চর্মেব রোদসী।।৮।। (১৮৩) অয়মু তে সমতসি কপোত ইব
গর্ভধিম্। বচস্তচ্চিন্ন ওহসে।।৯।। (১৮৪) বাত আ বাতু ভেষজং শম্ভু ময়োভু নো হৃদে।
প্র ন আয়ুংষি তারিষৎ।।১০।
অনুবাদঃ (১৭৫) কর্মকে পরিচালনা করতে ইচ্ছা করে
অন্তরিক্ষে অবস্থিত পরিচালিকা শক্তিগণ সুবীর্য ইন্দ্রকে জন্মমাত্রই উপাসনা করলেন।।
(১৭৬) হে দেবগণ, আমাদের কর্মে ত্রুটি করিনি কোন কাজে
শৈথিল্য প্রকাশ করিনি; আমরা শ্রুত মন্ত্র অনুসারে আচরণ
করি।। (১৭৭) স্বীয় কর্মে অবিচল, মহাগতিসম্পন্ন, দীপ্ত সূর্য অন্ধকার নাশ করে এসেছেন; সবিতাদেবকে
স্তব কর।। (১৭৮) প্রিয় ঊষা যাঁকে এর আগে দেখা যায় নি, তিনি এখন আকাশ থেকে অন্ধকার দূর করছেন। হে অহোরাত্ররূপী অশ্বিদ্বয়, তোমাদের দু'জনকে প্রভূত স্তুতি করি।। (১৭৯) অপরাজিত
ইন্দ্র লোকপালনের জন্য ধ্যানস্থ সূর্য (দধীচি) থেকে বজ্র (-অস্থি) আহরণ ক'রে অসংখ্যবার বৃত্রকে (মেঘকে) বধ করে থাকেন। (১৮০) হে ইন্দ্র এস; সকল সোমযাগে সোমপানে হৃষ্ট হয়ে বলের দ্বারা মহান হয়ে শত্রুপরাভবকারী হয়।।
(১৮১) হে বৃত্রহন্তা ইন্দ্র, মহান তুমি; তোমার মহৎ পালনের জন্য আমাদের কাছে শীঘ্র এস। (১৮২) ইন্দ্রের বল বিশেষভাবে
দীপ্তি লাভ করে, যখন দ্যু ও পৃথিবী উভয়ে মিলিতভাবে মেঘ
সৃষ্টি করেন শরীরচর্মের মত ইন্দ্র দ্যু ও পৃথিবীকে আবৃত করে আছেন। (১৮৩) হে ইন্দ্র, এই সোম তোমার জন্য কপোত যেমন কপোতীর প্রতি বকম্ শব্দে ধাবমান হয়, তুমিও তেমনি গুরুগুরু গর্জনে সোমের প্রতি ধাবমান হও; আর সেই মেঘধ্বনিরূপ বাক্যের দ্বারা আমাদের প্রাপ্ত হও।।। (১৮৪) বায়ু আমাদের
অভিমুখে প্রবাহিত হোন; তিনি ভেষজকে সকল কালেই আমাদের জন্য
সুখপ্রদ করুন; তিনি আমাদের আয়ু বৃদ্ধি করুন।।
অষ্টম খন্ডঃ মন্ত্র সংখ্যা ৯।। দেবতা ইন্দ্র।। ছন্দ গায়ত্রী।। ঋষিঃ কান্ব, ২।৩ বৎস কান্ব (ঋগ্বেদে ২।৯ বশোহশ্ব্য), ৪ শ্রুতকক্ষ বা সুকক্ষ আঙ্গিরস, ৫ মধুচ্ছন্দা বৈশ্বামিত্র, ৬ বামদেব গৌতম, ৭ ইরিম্বিঠি কান্ব, ৮ সত্যধৃতি বারুণি।।
মন্ত্রঃ (১৮৫) যং
রক্ষন্তি প্রচেতসো বরুণো মিত্রো অর্যমা। নকিঃ স দভ্যতে জনঃ।।১।। (১৮৬) গব্যো ষু ণো
যথা পুরাশ্বযোত রথয়া। বরিবষ্যা মহোনাম্।।২।। (১৮৭) ইমাস্ত ইন্দ্র পৃশ্নয়ো ঘৃতং
দুহত আশিরম্। এনামৃতস্য পিপ্যুষীঃ।।৩।। (১৮৮) অয়া ধিয়া চ গব্যয়া পুরুণামন্
পুরুষ্টুত। যৎ সোমেসোম আভুবঃ।।৪।। (১৮৯) পাবকা নঃ সরস্বতী বাজের্ভিবাজিনীবতী।
যজ্ঞং বষ্টু ধিয়াবসুঃ।।৫।। (১৯০) ক ইমং নাহুষীম্বা ইন্দ্রং সোমস্য তর্পয়াৎ। স নো
বসূন্যা ভরাৎ।।৬।। (১৯১) আ যাহি সুষুমা হি ত ইন্দ্র সোমং পিবা ইমম্। এদং বর্হিঃ
সদো মম।।৭।। (১৯২) মহি ত্রীণামবরস্তু দ্যুক্ষং মিত্রস্যার্যম্ণঃ। দুরাধর্ষং
বরুণস্য।।৮।। (১৯৩) ত্বাবতঃ পুরূবসো বয়মিন্দ্র প্রণেতঃ। স্মসি স্থাতর্হরীণাম।।৯।।
অনুবাদঃ (১৯৫) প্রকৃষ্টজ্ঞানযুক্ত বরুণ মিত্র ও
অর্যমা যাঁকে রক্ষা করেন তাঁকে কোন মানুষই দ্বেষ করতে পারে না। (১৮৬) হে ইন্দ্র,
গো অশ্ব ও রথলাভের ইচ্ছা হলে পূর্বে যেমন দান করতে তেমনি মহৎ দানে আমাদের ইচ্ছা
পূরণ কর।। (১৮৭) হে ইন্দ্র, জাগতিক সুনিয়ন্ত্রিত ঋতকর্মে নিযুক্ত তোমার দেবরশ্মিগণ
অমৃত বারিরাশি দোহন করে।। (১৮৮) হে বহুস্তুত বহুনামবিশিষ্ট ইন্দ্র, আমরা অমৃত
বারিরাশির দ্বারা ধী‑বিশিষ্ট কর্মে নিযুক্ত হব যেহেতু তুমি প্রতি সোমকর্মে
(=বারিসৃষ্টিকর্মে) উপস্থিত থাক।। (১৮৯) পবিত্রা অন্নবর্তী কর্মফলদাত্রী বাক্
জলের অধিষ্ঠাত্রী সরস্বতী দেবী আমাদের যজ্ঞকে কামনা করুন।। (১৯০) মানুষের মধ্যে কে
ইন্দ্রকে সোমের দ্বারা প্রীত করতে পারে? তিনিই আমাদের সর্বসম্পদে পূর্ণ করেছেন।।
(১৯১) হে ইন্দ্র, এস; তোমার জন্য এই চারু সোম, তুমি পান কর; এই যজ্ঞাসনে বস।।
(১৯২) দ্যুলোকস্থ দুরাধর্ষ মিত্র অর্যমা ও বরুণ এই তিনি মহান্ দেবের পালন আমাদের
রক্ষা করুক।। (১৯৩) হে বহুধন, উদক ও যজ্ঞের নেতা ইন্দ্র, তোমাসদৃশ দেবকেই আমরা
কামনা করি, তুমি সকল দেবরশ্মিরূপ অশ্বের অধিষ্ঠাতা।।
নবম খণ্ডঃ মন্ত্র সংখ্যা ১০।। দেবতা ইন্দ্র।। ছন্দ গায়ত্রী।। ঋষিঃ ১ প্রগাথ কান্ব, ২ গাথি বিশ্বামিত্র, ৩।১০ বামদেব গৌতম, ৪।৬ শ্রুতকক্ষ আঙ্গিরস, ৫ মধুচ্ছন্দা বৈশ্বামিত্র, ৭ গৃৎসমদ শৌনক, ৮।৯ ভরদ্বাজ বার্হস্পত্য।।
মন্ত্রঃ (১৯৪) উত্বা মন্দন্তু সোমাঃ কৃণুম্ব রাধো
অদ্রিবঃ।। অব ব্রহ্মদ্বিষো জহি।।১।। (১৯৫) গির্বণঃ পাহি নঃ সুতং মধ্যের্ধারাভিরজ্যসে।
ইন্দ্র দ্বাদাতমিদ্ যশঃ।।২।। (১৯৬) সদা ব ইন্দ্রশ্চর্কৃষদা উপো নু স সপর্যন্। ন
দেবো বৃতঃ শূর ইন্দ্রঃ।।৩।। (১৯৭) আ ত্বা বিশন্ত্বিন্দবঃ সমুদ্রমিব সিন্ধবঃ। ন
ত্বামিন্দ্রাতিরিচ্যতে।।৪।। (১৯৮) ইন্দ্রমিদ্ গাথিনো বৃহদিন্দ্রমর্কেভিরর্কিণঃ।
ইন্দ্রং বাণীরনূষত।।৫।। ইন্দ্র ইষে দদাতু ন ঋভুক্ষণমৃভুং রয়িম্। বাজী দদাতু
বাজিনম্।।৬।। (২০০) ইন্দ্রো অঙ্গ মহদ্ভয়মভীষদপ চুচ্যবৎ। স হি স্থিরো
বিচর্ষণিঃ।।৭।। (২০১) ইমা উ ত্বা সুতেসুতে নক্ষন্তে গির্বণো গরঃ। গাবো বৎসং ন
ধেনবঃ।।৮।। (২০২) ইন্দ্রা নু পূষণা বয়ং সখ্যায় স্বস্তয়ে। হিবেম বাজসাতয়ে।।৯।।
(২০৩) ন কি ইন্দ্র ত্বদুত্তরং ন জ্যায়ো অস্তি বৃত্রহন্। ন ক্যেবং যথা ত্বম্।।১০।।
অনুবাদঃ (১৯৪) হে বজ্রধারী ইন্দ্র, সোমসকল তোমাকে
উত্তমরূপে হর্ষান্বিত করুক; আমাদের ধন প্রদান কর; আর ব্রহ্মদ্বেষীকে বিনাশ কর।।
(১৯৫) হে স্তুতিপ্রিয় ইন্দ্র, মধুর সোমধারায় তোমার পূজা হয়ে থাকে; তুমি আমাদের সোম
পান কর। হে ইন্দ্র, যশরূপ অন্ন তোমারই দান।। (১৯৬) ইন্দ্র সর্বদাই তোমাদের জন্য
পুনঃ পুনঃ কর্ষণের ব্যবস্থা করেন; সেই যথার্থ অনুষ্ঠাতাকেই কামনা কর; কোন দেবতাই
শূর ইন্দ্রের মত আচ্ছাদিত করতে পারেন না।। (১৯৭) নদীসকল যেমন সমুদ্রে মেশে তেমনি
সকল সোমধারাই তোমাতে মিলিত হয়; হে ইন্দ্র, তোমাকে কেহ অতিক্রম করতে পারে না।।
(১৯৮) সাম গায়কেরা (=সামগান গায়কেরা) বৃহৎ সামে, ঋগ্বেদীয় হোতাগণ ঋক্ মন্ত্রে,
যজুর্বেদীগণ যজুর্মন্ত্রে ইন্দ্রকেই স্তব করেন।। (১৯৯) ইন্দ্র আমাদের অন্নদান
ইচ্ছা করে অন্তরিক্ষে নিবাসী সূর্যরশ্মিসমূহ থেকে আহৃত বৈদ্যুতিক জ্যোতিরূপ ধন দান
করেন; (বাজী=) অন্ন বল ও বাকের অধিকর্তা ইন্দ্র, (সেই বৈদ্যুতিক জ্যোতি থেকে
সৃষ্ট) অন্ন বল ও বাক্ দান করুন।। (২০০) ইন্দ্র অবিলম্বে মহৎ ভয়ে ভীতগ্রস্ত
অবস্থা থেকে মুক্ত করুন; তিনি স্থিরপ্রজ্ঞ ও বিশ্বদ্রষ্টা।। (২০১) হে স্তুতিপ্রিয়
ইন্দ্র, প্রতি সোম অভিষবে আমাদের সকিল স্তুতি তোমা অভিমুখে ধাবিত হয়, গোবৎসের
প্রতি গাভী যেমন যায়।। (২০২) ইন্দ্র ও পূষাকে আমরা সখ্যতার জন্য, মঙ্গলের জন্য ও
বিপুল ধনের জন্য আহ্বান করি।। (২০৩) হে বৃত্রহন্তা ইন্দ্র, তোমার ওপরে কোন দেবতা
নেই, তোমার চেয়ে শ্রেষ্ঠ কোন দেবতা নেই, আর তুমি যেমন, তেমন কোন দেবতাও নেই।।
দশম খণ্ডঃ মন্ত্রসংখ্যা ১০।। দেবতা ইন্দ্র।। ছন্দ গায়ত্রী।। ঋষি ১।৪ ত্রিশোক কান্ব, ২ মধুচ্ছন্দা বৈশ্বামিত্র, ৩ বৎস কান্ব (ঋগ্বেদে অশ্বপুত্র বশ), ৫ সুকক্ষ আঙ্গিরস, ৬।৯ বামদেব গৌতম, ৭ গাথি বিশ্বামিত্র, ৮ গোষুক্তি ও অশ্বসুক্তি কান্ব, ১০ শ্রুতকক্ষ বা সুকক্ষ আঙ্গিরস।।
মন্ত্রঃ (২০৪) তরণিং বো জনানাং ত্রদং বাজস্য
গোমতঃ। সমানমু প্র শংসিষম্।।১।। (২০৫) অসৃগ্রমিন্দ্র তে গিরঃ প্রতি ত্বামুদহাসত।
সজোষা বৃষভং পতিম্।।২।। (২০৬) সুনীথো ঘা স মর্ত্যো যং মরুত যমর্যমা।
মিত্রাস্পান্ত্যদ্রুহঃ।।৩।। (২০৭) যদ্বীডাবিন্দ্র যৎ স্থিরে যৎ পর্শানে পরাভূতম্।
বসু স্পার্হং তদা ভর।।৪।। (২০৮) শ্রুতং বো বৃত্রহন্তমং প্র শর্ধং চর্ষণীনাম্।
আশিষে রাধসে মহে।।৫।। (২০৯) অরং ত ইন্দ্র শ্রবসে গমেম শূর ত্বাবতঃ। অরং শক্র
পরেমণি।।৬।। (২১০) ধানাবন্তং করম্ভিণমপূবন্তমুক্থিনম্। ইন্দ্র প্রাতর্জুষস্ব
নঃ।।৭।। (২১১) অপাং ফেনেন নমুচেঃ শির ইন্দ্রোদবর্তয়ঃ। বিশ্বা যদজয় স্পৃধঃ।।৮।। ইমে
ত ইন্দ্র সোমাঃ সুতাসো যে চ সোত্বাঃ। তেষাং মৎস্ব প্রভূবসো।।৯।। (২১৩) তুভ্যং
সুতাসঃ সোমাঃ স্তীর্ণং বর্হির্বিভাবসো। স্তোতৃভ্য ইন্দ্র মৃড়য়।।১০।।
অনুবাদঃ (২০৪) তোমাদের সকলের জন্য উদকযুক্ত
অন্ন-বলের অবাধ উদ্ঘাটক, সমদৃষ্টিসম্পন্ন, দক্ষ, আদরণীয় ইন্দ্রকে স্তব করি। (২০৫)
হে ইন্দ্র, আমি তোমার উদ্দেশে মন্ত্র উচ্চারণ করছি; তুমি বর্ষণশীল, রক্ষক; তোমাকে
প্রাপ্ত হবে বলে এই স্তুতি ঊর্ধ্বলোকে গমন করছে; তুমি তা প্রীতির সঙ্গে গ্রহণ
করেছ। (২০৬) হিংসাশূন্য, দ্বাষশূন্য প্রাণবায়ু মরুৎগণ যাঁকে রক্ষা করেন, শত্রুভূত
অন্ধকারনাশক অর্যমা (=আদিত্য) যাঁকে রক্ষা করেন, মরণ থেকে ত্রাণকারী মিত্র
(=আদিত্য) যাঁকে রক্ষা করেন, সেই মানুষই দেবতার স্তুতিকরণে সুসমর্থ হয়। (২০৭) হে
ইন্দ্র, দৃঢ় দুর্গম স্থানে, স্থাবর, মেঘের মধ্যে যে ধন তুমি গুপ্ত রেখেছ সেই
স্পৃহণীয় ধন আমাদের জন্য আন। (২০৮) শ্রুতকীর্তি, বৃত্রহন্তা, জনগণের যজ্ঞকর্মে
উৎসাহী ইন্দ্রের কাছে তোমাদের জন্য সর্বসিদ্ধিকর মহাধন কামনা করি। (২০৯) হে শূর,
হে ইন্দ্র, তোমার মত প্রচুর যশ ইচ্ছা করে তোমার কাছে এসেছি। হে দানসমর্থ দেব, এমন
ভাবে দাও যেন উছলে পড়ে।। (২১০) হে ইন্দ্র, আমাদের এই প্রাতঃকালীন যজ্ঞে তোমার
উদ্দেশে ভাজা যবের ছাতু, দধিমিশ্রিত সোম ও আস্কে পিঠে যা নিবেদন করলাম এবং যে
স্তুতি করলাম তা’ তুমি গ্রহন কর। (২১১) হে ইন্দ্র, যখন বর্ষণবিমুখ মেঘের
(=নমুচির) মস্তক আকাশে অবস্থিত জলরাশির ফেনার আঘাতে ছিন্ন করলে তখন তুমি সকল
স্পর্ধমান মেঘকেই জয় করলে। (২১২) হে ইন্দ্র, এই যা কিছু সোম (=বারিরাশি) সৃষ্ট
হয়েছে, তা’ তোমার জন্যই হয়েছে। হে প্রয়োজনের অতিরিক্ত ধনের ঈশ্বর,
তুমি তাদের পেয়ে হর্ষান্বিত হও। (২১৩) হে বিভাবসু, তোমার জন্যই অভিষুত সোম
অন্তরিক্ষ বিস্তৃত হয়েছে; হে ইন্দ্র, স্তুতিকারকদের জন্য সুখপ্রদ হও।
একাদশ খণ্ডঃ মন্ত্রসংখ্যা ৯।। দেবতা ইন্দ্র।। ছন্দ গায়ত্রী।। ঋষি – ১ শুনঃশেপ আজীগর্তি, ২ শ্রুতকক্ষ বা সুকক্ষ আঙ্গিরস, ৩ ত্রিশোক কান্ব, ৪।৯ মেধাতিথি কান্ব, ৫ গোতম রাহুগণ, ৬ ব্রাহ্মতিথি কান্ব, ৭ গাথি বিশামিত্র বা জমদগ্নি ভার্গব, প্রস্কন্ব কান্ব।
মন্ত্রঃ (২১৪) আ ব ইন্দ্রং ক্রিবিং যথা বাজয়ন্তঃ
শতক্রতুম্। মংহিষ্ঠং সিঞ্চ ইন্দুভিঃ।।১।। (২১৫) অতশ্চিদিন্দ্রি ন উপা যাহি
শতবাজয়া। ইষা সহস্রবাজয়।।২।। (২১৬) আ বুন্দং বৃত্রহা দদে জাতঃ পৃচ্ছাদ্ব বি মাতরম্।
ক উগ্রাঃ কে হ শৃন্বিরে।।৩।। (২১৭) বৃবদুক্থং হবামহে সুপ্রকরস্নমূতয়ে। সাধঃ
কৃন্বন্তমবসে।।৪।। (২১৮) ঋজুনীতী নো বরুণো মিত্র নয়তি বিদ্বান্। অর্যমা দেবৈঃ
সজোষাঃ।।৫।। (২১৯) দূরাদিহেব যৎসতোহরুণপ্সুরশিশ্বিতৎ।
বি ভাণুং বিশ্বথাতনম্।।৬।। (২২০) আ নো মিত্রাবরুণা গৃতৈর্গব্যুতিমুক্ষতম্। মধ্বা
রজাংসি সুক্রতু।।৭।। (২২১) ঊদু ত্যেঁ সূনবো গিরঃ কাষ্ঠা যজ্ঞেম্বত্নত। বাশ্রা
অভিজ্ঞু যাতবে।।৮।। (২২২) ইদং বিষ্ণুর্বিচক্রমে ত্রেধা নি দধে পদম্। সমূঢ়স্য
পাংসুরে।।৯।।
অনুবাদঃ (২১৪) অন্নকামিগণ যেমন কূপকে সেচন করে
তেমনি তোমাদের জন্য শতকর্মা শ্রেষ্ঠদাতা ইন্দ্রকে সোমরসে সিক্ত করি।। (২১৫) হে
ইন্দ্র, শতবল ও সহস্র অন্নের সঙ্গে দ্যুলোক হতে আমাদের কাছে এস।। (২১৬)
মেঘবিদারণকারী ইন্দ্র জন্মেই তীক্ষ্ণ বাণ ধারণ করলেন, আর জিজ্ঞাসা করলেন মাতাকে,
কারা উগ্র বলে খ্যাত, কেই বা তাদের কথা শুনেছে? (২১৭) উদকরূপ প্রসারিত বাহুর
দ্বারা পালনের জন্য, রশ্মিদানরূপ সুকর্মের দ্বারা আশ্রয়দানের জন্য মহান
স্তুতিযুক্ত ইন্দ্রকে ডাকি।। (২১৮) বরুণ ও মিত্র আমাদের ভক্তিভাব জেনে আমাদের
ঋজুপথে নিয়ে যায়; দেবগণসহ অর্যমাও প্রীতির সঙ্গে আমাদের ঋজুপথে নিয়ে চলুন।। (২১৯)
দূরে থেকেও উজ্জ্বলদীপ্তি ঊষা তাঁর শ্বেতরূপ বিশ্ব আকাশে ছড়িয়ে দেন।। (২২০) হে
শোভনকর্ম-বিশিষ্ট মিত্র ও বরুণ, আমাদের গোষ্ঠ ঘৃতপূর্ণ কর; পৃথিবী মধুময় হোক।। (২২১)
মরুদগণ সকল বাণী সৃষ্টি করেন; তাঁরা ধেনুর মত শব্দ করতে করতে বারিরাশির বিস্তারের
দ্বারা কর্ম সাধন করেন।। (২২২) বিষ্ণুর স্থান অন্তরিক্ষে দৃঢ়রূপে স্থাপিত; তিনি
সেইখানে অবস্থিত থেকেই তিনি প্রকার পদ স্থাপনের দ্বারা (=উত্তরায়ণ, দক্ষিণায়ণ ও
বিষুবসংক্রান্তি) এই চরাচর বিশ্ব পরিক্রমা করেন।। [বিষ্ণু=সূর্য]।।
দ্বাদশ খণ্ডঃ মন্ত্র সংখ্যা ১০।। দেবতা ইন্দ্র।। ছন্দ গায়ত্রী। ঋষিঃ ১।৭।৮ মেধাতিথি কান্ব, ২ বামদেব গৌতম, ৩।৫ মেধাতিথি কান্ব ও প্রিয়মেধ আঙ্গিরস, ৪ গাথি বিশ্বামিত্র, ৬ দুর্মিত্র বা সুমিত্র কৌৎস, ৯ গাথি বিশ্বামিত্র বা অভীপাদ্ উদল, ১০ শ্রুতকক্ষ আঙ্গিরস।।
মন্ত্রঃ (২২৩) অতীহি মন্যুষাবিণং সুষুবাংসমুপেরয়।
অস্য রাতৌ সুতং পিব।।১।। (২২৪) কদু প্রচেতসে মহে বচো দেবায় শস্যতে। তদিধ্যস
বর্ধনম্।।২।। (২২৫) উক্থং চ ন শস্যমানং বাগোরয়িরা চিকেত। ন গায়ত্রং গীয়মানম্।।৩।।
(২২৬) ইন্দ্র উক্থেভির্মন্দিষ্ঠো বাজানাং চ বাজপতিঃ। হরিবান্ৎসুতানাং সখা।।৪।।
(২২৭) আ যাহ্যুপ নঃ সুতং বাজেভির্মা হৃণীযথাঃ। মহাঁ ইব যুবজানিঃ।।৫।। (২২৮) কদা
বসো স্তোত্রং হর্যত আ অব শ্মসা রুধদ্বাঃ। দীর্ঘং সুতং বাতাপ্যায়।।৬।। (২২৯)
ব্রাহ্মণাদিন্দ্র রাধসঃ পিবা সোমমৃতুঁরনু। তবেদং সখ্যমস্তৃতম্।।৭।। (২৩০) বয়ং ঘা
তে অপি স্মসি স্তোতার ইন্দ্র গির্বণঃ। ত্বং নো জিন্ব সোমপাঃ।।৮।। (২৩১) এন্দ্র
পৃক্ষু কাসু চিন্নৃম্ণং তনূষু ধেহি নঃ। সত্রাজিদুগ্র পৌংস্যম্।।৯।। (২৩২)
এবাহ্যসি বীরযুরেবা শূর উত স্তিরঃ। এবা তে ভাধ্যং মনঃ।।১০।।
অনুবাদঃ (২২৩) হে ইন্দ্র, তুমি সব সময়ে এস;
আন্তরিকতার সঙ্গে প্রস্তুত আমাদের সোম গ্রহণের জন্য এস। আর এই সোম আমাদের ধনদান
করবে বলে পান কর।। (২২৪) প্রকষ্টজ্ঞানী মহান দেবতার উদ্দেশে কেনই বা এই স্তুতি?
কারণ তা’ স্তুতিকারীর ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধি করে।। (২২৫) স্তুতিকারীর
স্তুতি আর গায়কের গায়ীছন্দের গান অসমর্থ ও বিদ্বেষীর বোধগম্য হয় না।। (২২৬) স্তুতি
দ্বারাই ইন্দ্র অত্যন্ত হৃষ্ট হন; তিনিই সকল অন্ন বল ও বাকের অধিপতি; তিনিই রশ্মির
অধিপতি; তিনিই সোমজ্ঞদের (=আনন্দবোধ-প্রাপ্তদের) সখা।। (২২৭) যুবতী পত্নীর প্রতি
মহান স্বামীর মত আমাদের সঙ্গে ব্যবহার কর, ক্রুদ্ধ হয়ো না; হে ইন্দ্র, আমাদের
অন্ন-বল দেবে বলে আমাদের এই অভিষুত সোমের কাছে এস।। (২২৮) নদী, খাল, বিল যেমন বারিরাশিকে
বদ্ধ করে তেমনি কবে আমাদের স্তোত্র তোমাকে আমাদের বশে আনতে পারবে? হে ধনস্বামী,
আমাদের এই সোমযাগ প্রচুর বারিবর্ষণ কামনা করে।। (২২৯) হে ইন্দ্র, তুমি ঋতুদের সোম
পানের পর ব্রহ্মজ্ঞ স্তুতিকারীর ধনভূত সোমপাত্র থেকে সোম পান কর; হে ইন্দ্র, তোমার
সখ্যতাই অবিচ্ছিন্ন।। (২৩০) হে স্তুতিপ্রিয় ইন্দ্র, আমরা তোমার স্তোতা বলেই হে
সোমপায়ী, আমাদের প্রীত কর।। (২৩১) হে ইন্দ্র, কিরূপ সংগ্রামে তুমি আমাদের দেহে বল
দেবে? হে সকল সোমযজ্ঞজয়ী, হে উগ্রবল, আমাদের বল দাও।। (২৩২) হে শূর, তুমি অবিচল,
তুমি বীর্যকামী, তুমি এইরূপ; তোমার আরাধ্য মনও এইরূপ।।