ইন্দ্র দেবতাঃ। বিশ্বামিত্রের পুত্র মধুচ্ছন্দা ঋষি। অনুষ্টুপ্ ছন্দ।
সূক্ত - গায়ন্তি ত্বা গায়ত্রিণোহর্চন্ত্যর্কমর্কিণঃ। ব্রহ্মাণস্ত্বা শতক্রত উদ্বংশমিব যেমিরে।।১।।
অনুবাদ : ।।১।। হে শতক্রতু! গায়কেরা তোমার উদ্দেশ্যে গান করে, অর্চকেরা অর্চনীয় ইন্দ্রকে অর্চনা করে; নর্তকেরা যেরূপ বংশখন্ডকে উন্নত করে, স্তুতিকারেরা (১) তোমাকে সেরূপ উন্নত করে।
সূক্ত - যৎসানোঃ সানুমারুহদ্ভূর্যস্পষ্ট কর্ত্বং। তদিন্দ্রো অর্থং চেততি যূথেন বৃষ্ণরেজতি।।২।।
অনুবাদ : ।।২।। যজমান সোমলতা আহরণার্থ যখন সানু হতে অপর সানুতে আরোহণ করে, এবং প্রভূত কর্ম উপক্রম করে, তখন ইন্দ্র যজমানের প্রয়োজন জানতে পারেন, এবং অভীষ্টবর্ষণে উৎসুক হয়ে মরুৎদলের সাথে যজ্ঞস্থানে আগমনার্থ উদ্যত হন।
সূক্ত - যুক্ষ্বা হি কোশিনা হরী বৃষণা কক্ষ্যপ্রা। অথা ন ইন্দ্র সোমপা গিরামুপশ্রুতিং চর।।৩
অনুবাদ : ।।৩।। তোমার কেশরযুক্ত, পরাক্রান্ত এবং পুষ্টাঙ্গ অশ্বদ্বয় সংযোজিত কর; তারপর হে সোমপায়ী ইন্দ্র! আমাদের স্তুতি শ্রবণার্থ নিকটে এস।
সূক্ত - এহি স্ত্বোমাঁ অভি স্বরাভি গৃণীহ্যা রুব। ব্রহ্ম চ নো বসো সচেন্দ্র যজ্ঞং চ বর্ধয়।।৪
অনুবাদ : ।।৪।। হে নিবাসকারণভূত ইন্দ্র! এস আমাদের স্তুতির প্রশংসা কর, অনুমোদন কর ও শব্দদ্বারা আনন্দ প্রকাশ কর, আমাদের অন্ন ও যজ্ঞ এককালে বর্ধন কর।
সূক্ত - উক্ থমিন্দ্রায় শংস্যং বর্ধনং পুরুনিষ্ ষিধে। শক্রো যথা সুতেষু নো রারনৎ-সখ্যেষু চ।।৫
অনুবাদ : ।।৫।। বহু শত্রুনিষেধকারী ইন্দ্রের উদ্দেশ্যে বর্ধনকারী উক্ থ গীত হবে; যেন সে ক্ষমতাশালী ইন্দ্র আমাদের পুত্র ও বন্ধুদের মধ্যে মহানাদ করেন।
সূক্ত - তমিৎসখিত্ব ঈমহে তাং রায়ে তং সুবীর্য্যে। স শক্র উত নঃ শকদিন্দ্রো দয়মানঃ।।৬
অনুবাদ : ।।৬।। আমরা মিত্রতার জন্য, ধনের জন্য সুবীর্যের জন্য তাঁর নিকট যাই; সে ক্ষমতাশালী ইন্দ্র আমাদের ধন দান করে আমাদের রক্ষণসমর্থ হয়েছেন।
সূক্ত - সুবিবৃতং সুনিরজমিন্দ্র ত্বাদাতমিদ্যশঃ। অবামপ ব্রজং বৃধি কৃণুষ্ব রাধো অদ্রিবঃ।।৭
অনুবাদ : ।।৭।। হে ইন্দ্র! তোমার প্রদত্ত অন্ন সর্বত্র প্রসারিত এবং সুখপ্রাপ্য, হে বজ্রধারী ইন্দ্র! গাভীর নিবাসস্থান খুলে দাও ধন সম্পাদন কর।
সূক্ত - নহি ত্বা রোদসী উভে ঋঘায়মাণমিণ্বতঃ। জেষঃ স্বর্বতীরপঃ সং গা অস্মভ্যং ধূনূহি।।৮
অনুবাদ : ।।৮।। হে ইন্দ্র! শত্রুবধ কালে এ উভয় জগৎ তোমাকে ধারণ করতে পারে না; তুমি স্বর্গীয় জল জয় কর, আমাদের সম্যকরূপে গাভী প্রেরণ কর।
সূক্ত - আশ্রুৎকর্ম শ্রুধী হবং নূ চিদ্দধিষ্ব মে গিরঃ। ইন্দ্র স্তোমমিমং মম কৃষ্বা যুজশ্চিদন্তরম্।।৯
অনুবাদ : ।।৯।। হে ইন্দ্র! তোমার কর্ণ চারদিকে হতে শুনতে পায়, আমাদের আহ্বান শীঘ্র শ্রবণ কর; আমার স্তুতি ধারণ কর, আমার এ স্তোত্র ও আমার সখার স্তোত্র আপনার নিকটে ধারণ কর।
সূক্ত - বিদ্মা হি ত্বা বৃষন্তমং বাজেষু হবনশ্রুতং। বৃষন্তমস্য হূমহ ঊতিং সহস্রসাতমাম্।।১০
অনুবাদ : ।।১০।। আমরা তোমাকে জানি; তুমি প্রভূতরূপে অভীষ্ট বর্ষণ কর, তুমি সংগ্রামে আমাদের আহ্বান শ্রবণ কর; আমরা সম্যগভীষ্টবর্ষীর সহস্রধনপ্রদ আশ্রয় প্রার্থনা করি।
সূক্ত - আ তূ ন ইন্দ্র কৌশিক মন্দসানঃ সুতং পিব। নব্যমায়ুঃ প্র সূ তির কৃধী সহস্রসামৃষিম্।।১০
অনুবাদ : ।।১১।। হে ইন্দ্র! শীঘ্র আমাদের নিকটে এস; হে কুশিকপুত্র (২) হৃষ্ট হয়ে অভিষুত সোম পান কর; নব্য আয়ুঃ সম্যকরূপে বর্ধন কর, এ ঋষিকে সহস্রধনোপেত কর।
সূক্ত - পরি ত্বা গির্বণো গির ইমা ভবন্তু বিশ্বতঃ। বৃদ্ধায়ুমনু বৃদ্ধয়ো জুষ্টা ভবন্তু জুষ্টয়ঃ।।১০
অনুবাদ : ।।১২।। হে স্তুতিভাজন ইন্দ্র! চারদিক হতে এ স্তুতি তোমার নিকট উপনীত হোক; তুমি দীর্ঘায়ূঃ, তোমাকে অনুসরণ করে সে স্তুতি বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হোক; তোমার প্রীতি সাধন করে সে স্তুতি আমাদের প্রীতিকর হোক।
টীকাঃ
১। মূলে 'ব্রহ্মাণঃ' আছে। ঋগ্বেদে 'ব্রহ্ম' অর্থে স্তুতি বা প্রার্থনা এবং 'ব্রহ্ম' অর্থে স্তুতিকারী পুরোহিত। সায়ণ এ অর্থ করেছেন, এবং ইউরোপীয় পন্ডিতগণও ঐ অর্থ করেন। পন্ডিতবর রোথ 'ব্রহ্ম' শব্দের সাতটি অর্থ করেছেন, যথা - প্রার্থনা, মন্ত্র, পবিত্রবাক্য, জ্ঞান, সততা, পরমাত্মা, এবং পুরোহিত। মক্ষমূলর বিবেচনা করেন বৃহ ধাতুর একটি অর্থ বর্ধন, আর একটি অর্থ বাক্য এবং ঐ ধাতু হতে 'বৃহস্পতি' ও 'ব্রহ্মণস্পতি' উৎপন্ন হয়েছে। Origin and Growth ofReligion (1882) PP. 366, 367 note. ব্রহ্মণস্পতি বা বৃহস্পতি স্তুতিদেব। [ হে ইন্দ্র! স্তুতিকারের (৩) ধনযুক্ত পাত্র হতে ঋতুদের পর তুমি সোম পান কর, যেহেতু তোমার মিত্রতা অবিচ্ছিন্ন। হে ব্রহ্মণস্পতি (১)! সোমরসদাতাকে (অর্থাৎ আমাকে) উশিজ-পুত্র কক্ষীবানের (২) ন্যায় দেবগণের নিকট প্রসিদ্ধ কর। ]
২। "যদ্যপি বিশ্বামিত্রঃ কুশিকস্য পৃত্রস্তথাপি তদ্রুপেণ ইন্দ্রস্যৈবোৎপন্নত্বাৎ কুশিকপুত্রত্বমবিরুদ্ধম্।" "কুশিকস্ত্বৈষীরথিরিন্দ্রতুল্যং পুত্রমিচ্ছন ব্রহ্মচর্যং চচার। তস্যেন্দ্র এব গাথীপুত্র যজ্ঞে।" সায়ণ।
সূক্ত - গায়ন্তি ত্বা গায়ত্রিণোহর্চন্ত্যর্কমর্কিণঃ। ব্রহ্মাণস্ত্বা শতক্রত উদ্বংশমিব যেমিরে।।১।।
অনুবাদ : ।।১।। হে শতক্রতু! গায়কেরা তোমার উদ্দেশ্যে গান করে, অর্চকেরা অর্চনীয় ইন্দ্রকে অর্চনা করে; নর্তকেরা যেরূপ বংশখন্ডকে উন্নত করে, স্তুতিকারেরা (১) তোমাকে সেরূপ উন্নত করে।
সূক্ত - যৎসানোঃ সানুমারুহদ্ভূর্যস্পষ্ট কর্ত্বং। তদিন্দ্রো অর্থং চেততি যূথেন বৃষ্ণরেজতি।।২।।
অনুবাদ : ।।২।। যজমান সোমলতা আহরণার্থ যখন সানু হতে অপর সানুতে আরোহণ করে, এবং প্রভূত কর্ম উপক্রম করে, তখন ইন্দ্র যজমানের প্রয়োজন জানতে পারেন, এবং অভীষ্টবর্ষণে উৎসুক হয়ে মরুৎদলের সাথে যজ্ঞস্থানে আগমনার্থ উদ্যত হন।
সূক্ত - যুক্ষ্বা হি কোশিনা হরী বৃষণা কক্ষ্যপ্রা। অথা ন ইন্দ্র সোমপা গিরামুপশ্রুতিং চর।।৩
অনুবাদ : ।।৩।। তোমার কেশরযুক্ত, পরাক্রান্ত এবং পুষ্টাঙ্গ অশ্বদ্বয় সংযোজিত কর; তারপর হে সোমপায়ী ইন্দ্র! আমাদের স্তুতি শ্রবণার্থ নিকটে এস।
সূক্ত - এহি স্ত্বোমাঁ অভি স্বরাভি গৃণীহ্যা রুব। ব্রহ্ম চ নো বসো সচেন্দ্র যজ্ঞং চ বর্ধয়।।৪
অনুবাদ : ।।৪।। হে নিবাসকারণভূত ইন্দ্র! এস আমাদের স্তুতির প্রশংসা কর, অনুমোদন কর ও শব্দদ্বারা আনন্দ প্রকাশ কর, আমাদের অন্ন ও যজ্ঞ এককালে বর্ধন কর।
সূক্ত - উক্ থমিন্দ্রায় শংস্যং বর্ধনং পুরুনিষ্ ষিধে। শক্রো যথা সুতেষু নো রারনৎ-সখ্যেষু চ।।৫
অনুবাদ : ।।৫।। বহু শত্রুনিষেধকারী ইন্দ্রের উদ্দেশ্যে বর্ধনকারী উক্ থ গীত হবে; যেন সে ক্ষমতাশালী ইন্দ্র আমাদের পুত্র ও বন্ধুদের মধ্যে মহানাদ করেন।
সূক্ত - তমিৎসখিত্ব ঈমহে তাং রায়ে তং সুবীর্য্যে। স শক্র উত নঃ শকদিন্দ্রো দয়মানঃ।।৬
অনুবাদ : ।।৬।। আমরা মিত্রতার জন্য, ধনের জন্য সুবীর্যের জন্য তাঁর নিকট যাই; সে ক্ষমতাশালী ইন্দ্র আমাদের ধন দান করে আমাদের রক্ষণসমর্থ হয়েছেন।
সূক্ত - সুবিবৃতং সুনিরজমিন্দ্র ত্বাদাতমিদ্যশঃ। অবামপ ব্রজং বৃধি কৃণুষ্ব রাধো অদ্রিবঃ।।৭
অনুবাদ : ।।৭।। হে ইন্দ্র! তোমার প্রদত্ত অন্ন সর্বত্র প্রসারিত এবং সুখপ্রাপ্য, হে বজ্রধারী ইন্দ্র! গাভীর নিবাসস্থান খুলে দাও ধন সম্পাদন কর।
সূক্ত - নহি ত্বা রোদসী উভে ঋঘায়মাণমিণ্বতঃ। জেষঃ স্বর্বতীরপঃ সং গা অস্মভ্যং ধূনূহি।।৮
অনুবাদ : ।।৮।। হে ইন্দ্র! শত্রুবধ কালে এ উভয় জগৎ তোমাকে ধারণ করতে পারে না; তুমি স্বর্গীয় জল জয় কর, আমাদের সম্যকরূপে গাভী প্রেরণ কর।
সূক্ত - আশ্রুৎকর্ম শ্রুধী হবং নূ চিদ্দধিষ্ব মে গিরঃ। ইন্দ্র স্তোমমিমং মম কৃষ্বা যুজশ্চিদন্তরম্।।৯
অনুবাদ : ।।৯।। হে ইন্দ্র! তোমার কর্ণ চারদিকে হতে শুনতে পায়, আমাদের আহ্বান শীঘ্র শ্রবণ কর; আমার স্তুতি ধারণ কর, আমার এ স্তোত্র ও আমার সখার স্তোত্র আপনার নিকটে ধারণ কর।
সূক্ত - বিদ্মা হি ত্বা বৃষন্তমং বাজেষু হবনশ্রুতং। বৃষন্তমস্য হূমহ ঊতিং সহস্রসাতমাম্।।১০
অনুবাদ : ।।১০।। আমরা তোমাকে জানি; তুমি প্রভূতরূপে অভীষ্ট বর্ষণ কর, তুমি সংগ্রামে আমাদের আহ্বান শ্রবণ কর; আমরা সম্যগভীষ্টবর্ষীর সহস্রধনপ্রদ আশ্রয় প্রার্থনা করি।
সূক্ত - আ তূ ন ইন্দ্র কৌশিক মন্দসানঃ সুতং পিব। নব্যমায়ুঃ প্র সূ তির কৃধী সহস্রসামৃষিম্।।১০
অনুবাদ : ।।১১।। হে ইন্দ্র! শীঘ্র আমাদের নিকটে এস; হে কুশিকপুত্র (২) হৃষ্ট হয়ে অভিষুত সোম পান কর; নব্য আয়ুঃ সম্যকরূপে বর্ধন কর, এ ঋষিকে সহস্রধনোপেত কর।
সূক্ত - পরি ত্বা গির্বণো গির ইমা ভবন্তু বিশ্বতঃ। বৃদ্ধায়ুমনু বৃদ্ধয়ো জুষ্টা ভবন্তু জুষ্টয়ঃ।।১০
অনুবাদ : ।।১২।। হে স্তুতিভাজন ইন্দ্র! চারদিক হতে এ স্তুতি তোমার নিকট উপনীত হোক; তুমি দীর্ঘায়ূঃ, তোমাকে অনুসরণ করে সে স্তুতি বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হোক; তোমার প্রীতি সাধন করে সে স্তুতি আমাদের প্রীতিকর হোক।
টীকাঃ
১। মূলে 'ব্রহ্মাণঃ' আছে। ঋগ্বেদে 'ব্রহ্ম' অর্থে স্তুতি বা প্রার্থনা এবং 'ব্রহ্ম' অর্থে স্তুতিকারী পুরোহিত। সায়ণ এ অর্থ করেছেন, এবং ইউরোপীয় পন্ডিতগণও ঐ অর্থ করেন। পন্ডিতবর রোথ 'ব্রহ্ম' শব্দের সাতটি অর্থ করেছেন, যথা - প্রার্থনা, মন্ত্র, পবিত্রবাক্য, জ্ঞান, সততা, পরমাত্মা, এবং পুরোহিত। মক্ষমূলর বিবেচনা করেন বৃহ ধাতুর একটি অর্থ বর্ধন, আর একটি অর্থ বাক্য এবং ঐ ধাতু হতে 'বৃহস্পতি' ও 'ব্রহ্মণস্পতি' উৎপন্ন হয়েছে। Origin and Growth ofReligion (1882) PP. 366, 367 note. ব্রহ্মণস্পতি বা বৃহস্পতি স্তুতিদেব। [ হে ইন্দ্র! স্তুতিকারের (৩) ধনযুক্ত পাত্র হতে ঋতুদের পর তুমি সোম পান কর, যেহেতু তোমার মিত্রতা অবিচ্ছিন্ন। হে ব্রহ্মণস্পতি (১)! সোমরসদাতাকে (অর্থাৎ আমাকে) উশিজ-পুত্র কক্ষীবানের (২) ন্যায় দেবগণের নিকট প্রসিদ্ধ কর। ]
২। "যদ্যপি বিশ্বামিত্রঃ কুশিকস্য পৃত্রস্তথাপি তদ্রুপেণ ইন্দ্রস্যৈবোৎপন্নত্বাৎ কুশিকপুত্রত্বমবিরুদ্ধম্।" "কুশিকস্ত্বৈষীরথিরিন্দ্রতুল্যং পুত্রমিচ্ছন ব্রহ্মচর্যং চচার। তস্যেন্দ্র এব গাথীপুত্র যজ্ঞে।" সায়ণ।
No comments:
Post a Comment