ইন্দ্র দেবতাঃ। বিশ্বামিত্রের পুত্র মধুচ্ছন্দা ঋষি। গায়ত্রী ছন্দ।
সূক্ত - যুঞ্জন্তি ব্র্ধ্মমরুষং চরন্তং পরি তস্থুষঃ। রোচন্তে রোচনা দিবি।।১।।
অনুবাদ : ।।১।। চারদিকের লোকেরা সূর্যরূপ ইন্দ্রের প্রতাপান্বিত, অরুষ ও বিচরণকারী অশ্ব যোজনা করছে। আলোকগণ আকাশে দীপ্যমান রয়েছে(১)।
সূক্ত - যুঞ্জন্ত্যস্য কাম্যা হরী বিপক্ষসা রথে। শোনা ধৃষ্ণ্ নৃবাহসা।।২।।
অনুবাদ : ।।২।। তারা ইন্দ্রের কমনীয়, রক্তবর্ণ, তেজঃপূর্ণ ও পুরুষবাহক হরি নামক অশ্বদ্বয় রথের উভয় পার্শ্বে সংযোজিত করে।
সূক্ত - কেতুং কৃন্বন্নকেতবে পেশো মর্ষা অপেশসে। সমুষদ্ভিরজায়থাঃ।।৩
অনুবাদ : ।।৩।। হে মনুষ্যগণ! সূর্যরূপ ইন্দ্র নিদ্রায়া সংজ্ঞারহিতকে সংজ্ঞাদান করে, অন্ধকারে রূপরহিতকে রূপ দান করে, জলন্ত রশ্মির সাথে উদিত হন।
সূক্ত - আদহ স্বধামনু পূনর্গভত্বমেরিরে। দধানা নাম যজ্ঞিয়ম্।।৪
অনুবাদ : ।।৪।। তারপর মরুৎগণ (২) যজ্ঞার্হ নাম ধারণ করে স্বীয় প্রকৃতি অনুসারে মেঘের মধ্যে জলের গর্ভাকার রচনা করলেন।
সূক্ত - বীলু চিদারূজত্বুভির্গুহা চিদিন্দ্র বহ্নিভিঃ। অবিন্দ উস্রিয়া অনু।।৫
অনুবাদ : ।।৫।। হে ইন্দ্র! দৃঢ় স্থানের ভেদকারী এবং বহনশীল মরুৎদের সাথে তুমি গুহায় লুকান গাভী সমুদয় অন্বেষণ করে উদ্ধার করেছিলে (৩)।
সূক্ত - দেবযন্তো যথা মতিমচ্ছা বিদদ্বসুং গিরঃ। মহামনূষত শ্রুতম্।।৬
অনুবাদ : ।।৬।। স্তোতাগণ দেবতা কামনা করে ধনযুক্ত ও মহৎ ও বিখ্যাত মরুৎগণকে লক্ষ্য করে সুমন্ত্রী ইন্দ্রের ন্যায় স্তুতি করে।
সূক্ত - ইন্দ্রেণ সং হি দৃক্ষসে সংজগ্মানো অবিভ্যুষা। মন্দূ সমানবর্চসা।।৭
অনুবাদ : ।।৭।। হে মরুৎগণ! যেন তোমাদের ভীতিরহিত ইন্দ্রের সঙ্গে মিলিত দেখা যায়; তোমরা নিত্য প্রমুদিত ও তুল্যদীপ্তি বিশিষ্ট।
সূক্ত - অনবদ্যৈরভিদ্যুভির্মখঃ সহস্বদর্চতি। গণৈরিন্দ্রসা কাম্যৈঃ।।৮
অনুবাদ : ।।৮।। দোষ রহিত, স্বর্গাভিগত ও কাময়িতব্য মরুৎগণের সাথে ইন্দ্রকে বলসম্পন্ন বলে এ যজ্ঞ অর্চনা করছে।
সূক্ত - অতঃ পরিঙ্মন্না গহি দিবো বা রোচনাদধি। সমস্মিন্নুঞ্জতে গিরঃ।।৯
অনুবাদ : ।।৯।। হে চতুর্দিকব্যাপী মরুৎগণ! ঐ অন্তরিক্ষ হতে অথবা আকাশ হতে, অথবা দীপ্যমান আদিত্যমন্ডল হতে এস; এ যজ্ঞে ঋত্বিক সম্যকরূপে স্তুতি সাধন করছে।
সূক্ত - ইতো বা সাতিমীমহে দিবো বা পার্থিবাদধি। ইন্দ্রং মহো বা রজসঃ।।১০
অনুবাদ : ।।১০।। এ পৃথিবী হতে অথবা আকাশ হতে অথবা মহৎ অন্তরিক্ষ হতে ধন দানের জন্য ইন্দ্রের নিকট যাঙঞা করি।
টীকাঃ-
১। এ ঋকের অর্থ অপরিস্কার। যথা মূলে 'অরুষ' শব্দ আছে, সায়ণ তার অর্থ করেছেন 'হিংসক রহিত'। পন্ডিত মক্ষমূলর বলেন 'অরুষের' আদি অর্থ লোহিতবর্ণ এবং অরুষ বিশেষ্য হয়ে ব্যবহৃত হলে সূর্যের একটি অশ্বের নাম। তিনি আরও বলেন, এ সূর্যের লোহিত বর্ণ অশ্ব 'অরুষ' গ্রীসদেশে রূপান্তর প্রাপ্ত হয়ে 'Eros' নাম ধারণ করে প্রেমের দেবতা বলে পূজিত হতেন! - Chips from a German Workshop. সূর্যের অশ্বগণের সাধারণ নাম হরিৎ সেজন্য সূর্যকে হরিদশ্ব বলে। মক্ষমূলর বিবেচনা করেন এ 'হরিৎ'গণ গ্রীসদেশে রূপান্তর প্রাপ্ত হয়ে Charites নামক ধারন করে পরম রূপবতী ও কমনীয় দেবীরূপে পূজিত হতেন। - Science of Language.
২। মরুৎগণ কে? মরুৎ শব্দ "মৃ" ধাতু হতে উৎপন্ন, সে ধাতুর অর্থ আঘাত করা বাঁ হনন করা। মরুৎগণ আঘাতকারী বা ধ্বংসকর ঝড়বায়ু। ঐ ধাতু হতে লাটিনদের যুদ্ধদেব Mars ঐ নাম পেয়েছেন।
৩। পণিঃ নামক অসুরেরা দেবলোক হতে গাভী অপহরণ করে অন্ধকারে রেখেছিল, ইন্দ্র মরুৎদের সাথে তা উদ্ধার করেছিলেন। গাভীর অন্বেষণার্থ সরমা নাম্নী এক দেব কুক্কুরীকে নিযুক্ত করেছিলেন, এবং সরমা অসুরদের সাথে বন্ধুত্ব করে গাভীর অনুসন্ধান পেয়েছিল। সায়ণ। ইউরোপীয় পন্ডিত মক্ষমূলর বিবেচনা করেন এ বৈদিক উপাখ্যানটি প্রাতঃকালে প্রকৃতি সন্বন্ধীয় একটি উপমা মাত্র। তিনি বলেন, সরমা ঊষার একটি নাম। দেবগণের গাভীগণ অর্থাৎ সূর্যরশ্মি সমুদয় অন্ধকার দ্বারা অপহৃত হয়েছে। দেবগণ ও মানুষেরা তাদের উদ্ধারের জন্য ব্যস্ত হয়েছেন। অবশেষে ঊষা দেখা দিলেন। তিনি বিদ্যুৎগতিতে, গন্ধ পেয় কুক্কুরী যেরূপ যায় সেরূপ ইতস্ততঃ ধাবমান হতে লাগলেন। তিনি সন্ধান নিয়ে ফিরে এলে আলোকদেব ইন্দ্র প্রকাশ হয়ে অন্ধকারের সাথে যুদ্ধ করলেন এবং তাদের দূর্গ হতে সে দেবগাভী উদ্ধার করলেন। মক্ষমূলর আরও বিবেচনা করেন ট্রয়ের যুদ্ধের যে গল্প নিয়ে চিরস্মরিণীয় কবি হোমর গ্রীক ভাষায় মহাকাব্য লিখেছেন, সে গল্প এই পণিঃ ও সরমার গল্পের রূপান্তর মাত্র। 'The siege of Troy is but a repetition of the daily siege of the East, by the solar powers that every evenings are robbed of their brightest treasures in the west." - Science of Language.
সূক্ত - যুঞ্জন্তি ব্র্ধ্মমরুষং চরন্তং পরি তস্থুষঃ। রোচন্তে রোচনা দিবি।।১।।
অনুবাদ : ।।১।। চারদিকের লোকেরা সূর্যরূপ ইন্দ্রের প্রতাপান্বিত, অরুষ ও বিচরণকারী অশ্ব যোজনা করছে। আলোকগণ আকাশে দীপ্যমান রয়েছে(১)।
সূক্ত - যুঞ্জন্ত্যস্য কাম্যা হরী বিপক্ষসা রথে। শোনা ধৃষ্ণ্ নৃবাহসা।।২।।
অনুবাদ : ।।২।। তারা ইন্দ্রের কমনীয়, রক্তবর্ণ, তেজঃপূর্ণ ও পুরুষবাহক হরি নামক অশ্বদ্বয় রথের উভয় পার্শ্বে সংযোজিত করে।
সূক্ত - কেতুং কৃন্বন্নকেতবে পেশো মর্ষা অপেশসে। সমুষদ্ভিরজায়থাঃ।।৩
অনুবাদ : ।।৩।। হে মনুষ্যগণ! সূর্যরূপ ইন্দ্র নিদ্রায়া সংজ্ঞারহিতকে সংজ্ঞাদান করে, অন্ধকারে রূপরহিতকে রূপ দান করে, জলন্ত রশ্মির সাথে উদিত হন।
সূক্ত - আদহ স্বধামনু পূনর্গভত্বমেরিরে। দধানা নাম যজ্ঞিয়ম্।।৪
অনুবাদ : ।।৪।। তারপর মরুৎগণ (২) যজ্ঞার্হ নাম ধারণ করে স্বীয় প্রকৃতি অনুসারে মেঘের মধ্যে জলের গর্ভাকার রচনা করলেন।
সূক্ত - বীলু চিদারূজত্বুভির্গুহা চিদিন্দ্র বহ্নিভিঃ। অবিন্দ উস্রিয়া অনু।।৫
অনুবাদ : ।।৫।। হে ইন্দ্র! দৃঢ় স্থানের ভেদকারী এবং বহনশীল মরুৎদের সাথে তুমি গুহায় লুকান গাভী সমুদয় অন্বেষণ করে উদ্ধার করেছিলে (৩)।
সূক্ত - দেবযন্তো যথা মতিমচ্ছা বিদদ্বসুং গিরঃ। মহামনূষত শ্রুতম্।।৬
অনুবাদ : ।।৬।। স্তোতাগণ দেবতা কামনা করে ধনযুক্ত ও মহৎ ও বিখ্যাত মরুৎগণকে লক্ষ্য করে সুমন্ত্রী ইন্দ্রের ন্যায় স্তুতি করে।
সূক্ত - ইন্দ্রেণ সং হি দৃক্ষসে সংজগ্মানো অবিভ্যুষা। মন্দূ সমানবর্চসা।।৭
অনুবাদ : ।।৭।। হে মরুৎগণ! যেন তোমাদের ভীতিরহিত ইন্দ্রের সঙ্গে মিলিত দেখা যায়; তোমরা নিত্য প্রমুদিত ও তুল্যদীপ্তি বিশিষ্ট।
সূক্ত - অনবদ্যৈরভিদ্যুভির্মখঃ সহস্বদর্চতি। গণৈরিন্দ্রসা কাম্যৈঃ।।৮
অনুবাদ : ।।৮।। দোষ রহিত, স্বর্গাভিগত ও কাময়িতব্য মরুৎগণের সাথে ইন্দ্রকে বলসম্পন্ন বলে এ যজ্ঞ অর্চনা করছে।
সূক্ত - অতঃ পরিঙ্মন্না গহি দিবো বা রোচনাদধি। সমস্মিন্নুঞ্জতে গিরঃ।।৯
অনুবাদ : ।।৯।। হে চতুর্দিকব্যাপী মরুৎগণ! ঐ অন্তরিক্ষ হতে অথবা আকাশ হতে, অথবা দীপ্যমান আদিত্যমন্ডল হতে এস; এ যজ্ঞে ঋত্বিক সম্যকরূপে স্তুতি সাধন করছে।
সূক্ত - ইতো বা সাতিমীমহে দিবো বা পার্থিবাদধি। ইন্দ্রং মহো বা রজসঃ।।১০
অনুবাদ : ।।১০।। এ পৃথিবী হতে অথবা আকাশ হতে অথবা মহৎ অন্তরিক্ষ হতে ধন দানের জন্য ইন্দ্রের নিকট যাঙঞা করি।
টীকাঃ-
১। এ ঋকের অর্থ অপরিস্কার। যথা মূলে 'অরুষ' শব্দ আছে, সায়ণ তার অর্থ করেছেন 'হিংসক রহিত'। পন্ডিত মক্ষমূলর বলেন 'অরুষের' আদি অর্থ লোহিতবর্ণ এবং অরুষ বিশেষ্য হয়ে ব্যবহৃত হলে সূর্যের একটি অশ্বের নাম। তিনি আরও বলেন, এ সূর্যের লোহিত বর্ণ অশ্ব 'অরুষ' গ্রীসদেশে রূপান্তর প্রাপ্ত হয়ে 'Eros' নাম ধারণ করে প্রেমের দেবতা বলে পূজিত হতেন! - Chips from a German Workshop. সূর্যের অশ্বগণের সাধারণ নাম হরিৎ সেজন্য সূর্যকে হরিদশ্ব বলে। মক্ষমূলর বিবেচনা করেন এ 'হরিৎ'গণ গ্রীসদেশে রূপান্তর প্রাপ্ত হয়ে Charites নামক ধারন করে পরম রূপবতী ও কমনীয় দেবীরূপে পূজিত হতেন। - Science of Language.
২। মরুৎগণ কে? মরুৎ শব্দ "মৃ" ধাতু হতে উৎপন্ন, সে ধাতুর অর্থ আঘাত করা বাঁ হনন করা। মরুৎগণ আঘাতকারী বা ধ্বংসকর ঝড়বায়ু। ঐ ধাতু হতে লাটিনদের যুদ্ধদেব Mars ঐ নাম পেয়েছেন।
৩। পণিঃ নামক অসুরেরা দেবলোক হতে গাভী অপহরণ করে অন্ধকারে রেখেছিল, ইন্দ্র মরুৎদের সাথে তা উদ্ধার করেছিলেন। গাভীর অন্বেষণার্থ সরমা নাম্নী এক দেব কুক্কুরীকে নিযুক্ত করেছিলেন, এবং সরমা অসুরদের সাথে বন্ধুত্ব করে গাভীর অনুসন্ধান পেয়েছিল। সায়ণ। ইউরোপীয় পন্ডিত মক্ষমূলর বিবেচনা করেন এ বৈদিক উপাখ্যানটি প্রাতঃকালে প্রকৃতি সন্বন্ধীয় একটি উপমা মাত্র। তিনি বলেন, সরমা ঊষার একটি নাম। দেবগণের গাভীগণ অর্থাৎ সূর্যরশ্মি সমুদয় অন্ধকার দ্বারা অপহৃত হয়েছে। দেবগণ ও মানুষেরা তাদের উদ্ধারের জন্য ব্যস্ত হয়েছেন। অবশেষে ঊষা দেখা দিলেন। তিনি বিদ্যুৎগতিতে, গন্ধ পেয় কুক্কুরী যেরূপ যায় সেরূপ ইতস্ততঃ ধাবমান হতে লাগলেন। তিনি সন্ধান নিয়ে ফিরে এলে আলোকদেব ইন্দ্র প্রকাশ হয়ে অন্ধকারের সাথে যুদ্ধ করলেন এবং তাদের দূর্গ হতে সে দেবগাভী উদ্ধার করলেন। মক্ষমূলর আরও বিবেচনা করেন ট্রয়ের যুদ্ধের যে গল্প নিয়ে চিরস্মরিণীয় কবি হোমর গ্রীক ভাষায় মহাকাব্য লিখেছেন, সে গল্প এই পণিঃ ও সরমার গল্পের রূপান্তর মাত্র। 'The siege of Troy is but a repetition of the daily siege of the East, by the solar powers that every evenings are robbed of their brightest treasures in the west." - Science of Language.
No comments:
Post a Comment